বাসে অগ্নিসংযোগ বন্ধে ‘বিশেষ পরিকল্পনা’ পুলিশের

# বাসে যাত্রীবেশে অবস্থান করছেন পুলিশ সদস্যরা
# বিভিন্ন পয়েন্টে সাদা পোশাকে পুলিশের অবস্থান
# ঢাকায় ৫০ থানায় ৮০০০ পুলিশ সদস্য কাজ করছেন, মাঠপর্যায়েও ৫০০০
# সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি
# অতীতে অগ্নিসংযোগে জড়িতারা নজরদারিতে
# ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ সময় চিহ্নিত

হরতাল-অবরোধে নাশকতাকারীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে যাত্রীবাহী বাস। প্রতিটি কর্মসূচিতেই একাধিক বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা দিনের প্রতিটি ভাগেই বাসে আগুন দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরপরই নাশকতাকারাীদের তৎপরতা বেশি দেখা যাচ্ছে। এমনকি পুলিশের টহল ও স্থাপনার কাছাকাছি স্থানেও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব নাশকতায় প্রাণহানিও হয়েছে। আবার প্রতিটি আগুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। অধিকাংশ ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজও হাতে পেয়েছে পুলিশ। এরপরও এসব ঘটনায় গ্রেফতারের সংখ্যা খুবই কম। কয়েকজনকে আবার আটক করেছে উপস্থিত জনতা।

এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জনমনে স্বস্তি ফেরাতে কেন অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না তা নিয়েও উদ্বেগ জনমনে।

এমন পরিস্থিতিতে অগ্নিসংযোগ প্রতিরোধে পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বেশকিছু কৌশলী পদক্ষেপের কথা জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ঘোষণা করেছেন নাশকতা, অগ্নিসংযোগকারীদের প্রমাণসহ ধরিয়ে দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।

গত ১২ নভেম্বর রাজধানীর মিরপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতির মধ্যে আওয়ামী লীগের সমাবেশের কাছে দিনে-দুপুরে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়া হয়। প্রজাপতি পরিবহনের বাসটি ৪০ জন যাত্রী নিয়ে আব্দুল্লাহপুর থেকে মিরপুর-১ এর দিকে যাচ্ছিল। আওয়ামী লীগ নেতা ও পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাসটি মিরপুর-১০ গোলচত্বরে পৌঁছালে যাত্রীবেশে বাসে ওঠা কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি এতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার জানান, তিনি সমাবেশে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। এমন সময় দেখেন বাসে আগুন জ্বলছে। আগুন নেভাতে গিয়ে তার হাতেও আঘাত লাগে।

৯ নভেম্বর রাইদা পরিবহনের একটি বাসে রাজধানীর কুড়িলের দিকে যাচ্ছিলেন রামপুরার বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিল। বাসটি শাহজাদপুর আসার পর হঠাৎ করেই পেছনের কয়েক যাত্রী ‘আগুন’ ‘আগুন’ বলে চিৎকার করে নেমে যান। আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে বাসের অন্য যাত্রীরাও যে যেভাবে পারেন নামতে থাকেন। ৫-৭ মিনিটের মধ্যে পুরো বাসটি দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে বলে জানান খলিল। দুপুরের এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় একটি মামলা হয়। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও আসে পুলিশের হাতে। পুলিশের ভাষ্য, তারা অগ্নিসংযোগের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছে। তবে নাশকতাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে পারেনি এখনো।

১৪ নভেম্বর রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে বিআরটিসির একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে মিরপুর ফায়ার স্টেশনের একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন দেওয়ার ঘটনার সময় বিএনপির তিন নেতাকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশ। আটক বিএনপির তিন নেতা হলেন- মো. হাফিজুর রহমান (৩৫), শহীদুল ইসলাম (২০) ও মো. শামীম (৪৫)।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বলছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ১৭ দিনে সারাদেশে ১৫৪টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৩৭টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, পুলিশ বক্স, বাস কাউন্টারেও আগুন দেওয়া হয়েছে।

গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৯৪টি বাস, ৩টি মাইক্রোবাস, ২টি প্রাইভেটকার, ৮টি মোটরসাইকেল, ১৩টি ট্রাক, ৮টি কাভার্ডভ্যান, একটি অ্যাম্বুলেন্স, ২টি পিকআপ, ২টি সিএনজি, একটি নছিমন, একটি লেগুনা, ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী একটি গাড়ি ও পুলিশের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের চতুর্থ দফায় ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ শুরুর আগের দিন শনিবার রাতেই ঢাকায় ৮টি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ অবস্থায় বাসে অগ্নিসংযোগসহ অবরোধ সংশ্লিষ্ট নাশকতা প্রতিরোধে কঠোর হচ্ছে আইশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাসে আগুন বন্ধে রাজধানীর প্রতিটি স্টপেজে বাস ও যাত্রীদের ছবি তুলে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে প্রতিদিন সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার বাস চলাচল করে। ঢাকায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও দুর্বৃত্তরা বাসে অগ্নিসংযোগ করে যাচ্ছে। বাসের নিরাপত্তা দিতে পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করবে। বাসে আগুন জ্বালিয়ে নাশকতা রুখতে রাজধানীর ৫০টি থানায় আট হাজারের মতো পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। আরও পাঁচ হাজার সদস্য মাঠপর্যায়ে সরাসরি কাজ করছেন। এই ১৩ হাজার পুলিশ সদস্যকে নানা কৌশলে কাজে লাগানো হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ সময় চিহ্নিত করছেন।

ডিএমপির কর্মকর্তারা বলছেন, অগ্নিসংযোগকারীদের মধ্যে কেউ কেউ যাত্রীবেশে গাড়িতে উঠে বা নিচে থেকে অগ্নিসংযোগ করছেন। এজন্য তারা পেট্রোল, গান পাউডার, দিয়াশলাই, তুলা, পুরোনো কাপড় ব্যবহার করছেন। সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি বিধায় এই সময় নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এছাড়া খালি বাস দুর্বৃত্তদের টার্গেটের কেন্দ্রে থাকায় বিষয়টি নিয়ে বাসমালিকদের সঙ্গে বসে বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাসযাত্রীদের অনুরোধ করা হয়েছে পেছনের সিটগুলো খালি থাকলে সামনের দিকে এসে বসার জন্য। সম্ভব হলে পেছনের দিকে যেন বাসের পক্ষ থেকে একজন লোক রাখা হয়। এতে যাত্রীবেশে নাশকতার ঘটনাগুলো অনেকটাই ঠেকানো যাবে।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো প্রতিরোধে তারা কৌশলী ভূমিকা নিয়েছেন। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বাসে উঠে পুলিশ সদস্যরা যাত্রীদের ছবি তুলে রাখছেন। যাতে করে বাসটিতে নাশকতার ঘটনা ঘটলে যাত্রীদের সহজেই চিহ্নিত করা যায়। বাসমালিকদের সঙ্গেও তারা বৈঠক করছেন। ছবি তুলে রাখার বিষয়ে বাসস্টাফদেরও তারা উৎসাহিত করছেন। কোনো কোনো বাসে পুলিশ সদস্যরা যাত্রীবেশে উঠে অবস্থান করছেন। সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করছেন। এছাড়া অতীতে যারা অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িয়েছেন তাদের ওপরও নজরদারি করা হচ্ছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে বাসে আগুন বন্ধে জেলায় জেলায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হরতাল-অনবরোধকে পুঁজি করে কেউ যেন বাসে আগুন কিংবা কোনো নাশকতা করতে না পারে সেদিকে মাঠ পর্যায়ে সব পুলিশ সদস্যকে বার্তা দেওয়া হয়েছে।

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘বাসে অগ্নিসংযোগকারীদের ধরতে পুলিশ রাত-দিন মাঠে কাজ করছে। এরই মধ্যে আমরা বেশ কয়েকজনকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। বাসে নজরদারির জন্য বিভিন্ন স্থানে হঠাৎ চেকপোস্ট বাসনো হয়। সেই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে পেট্রোলিং (টহল)। যাত্রীদের সচেতনের পাশাপাশি আমাদের সোর্সদের কাজে লাগানো হচ্ছে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘এরই মধ্যে ঢাকা শহরে প্রায় ৮০টির বেশি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব আগুনের ঘটনায় ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। নাশকতা বন্ধে ঢাকার ৫০টি থানায় আট হাজারের মতো পুলিশ সদস্য কাজ করছেন এবং আরও পাঁচ হাজার সদস্য মাঠপর্যায়ে সরাসরি কাজ করছেন। এছাড়া অগ্নিসন্ত্রাস বন্ধে পুলিশের বিশেষ টিম মাঠে কাজ করছে।’

মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জসীম উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘যারা রাজনীতির নামে মানুষের শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করবে, অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে তাদের প্রচলিত আইনের বিধিবিধান মোতাবেক কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এতে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না, ছাড় দেওয়ার সুযোগও নেই।’

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘অবরোধের নামে যারা আগের দিন নাশকতা চালাচ্ছে, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে, বিচ্ছিন্নভাবে অচল বাসে আগুন দিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে, তারা দেশের যে প্রান্তেই থাকুক না কেন অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হবে। শুধু ঢাকার শহর নয়, নাশকতাকারীরা দেশের যে প্রান্তেই থাকুক না কেন তাদের গ্রেফতার করবো। অনেকের নাম আমরা পেয়েছি। অনেককে গ্রেফতার করেছি।’

পুলিশের নানান তৎপরতার পরও একের পর এক বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটছে কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের প্রত্যেকটি জায়গায় থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ টহল দিচ্ছে। মোবাইল কোর্ট চলছে, আমরা চেকপোস্ট বসাচ্ছি। যারা বাসে আগুন দিচ্ছে তাদের গ্রেফতার করছি। নাশকতাকারীরা ফৌজদারি অপরাধ করছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং চোরাগোপ্তা কিংবা ছদ্মবেশে হামলা। সমকালীন সময়ে আমরা এর কিছু নমুনা দেখছি। তারপরও যত ধরনের নিরাপত্তা পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায় সেটি আমরা করছি। কিন্তু যারা এ ধরনের চোরাগোপ্তা নাশকতা করছে, তারাও তাদের স্থান ও সময় পরিবর্তন করছে। তারা যে জিনিস দিয়ে নাশকতা করছে সেগুলোরও পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে। এখন যারা যাত্রীবেশে চোরাগোপ্তা হামলা কিংবা নাশকতা করছে সেটি ১০০ ভাগ নির্মূল করা চ্যালেঞ্জিং। তবে আমাদের চেষ্টা আছে। যদি কেউ কোনোভাবে নাশকতা করতে চায় বা জীবন এবং সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়, তাদের ধরা হবে ও আইনের কাছে সোপর্দ করা হবে।’

এ বিষয়ে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীরা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্জন স্থান বা তাদের সুবিধাজনক সময় বেছে নেয়। বেশিরভাগ দুষ্কৃতকারী মোটরসাইকেল কিংবা যাত্রীবেশে বাসে বসে আগুন দেওয়ার পর দ্রুততম সময়ে পালিয়ে যাচ্ছে। আবার বিভিন্ন অলিগলি থেকেও দুষ্কৃতকারীরা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পরও দুষ্কৃতকারীরা যানবাহনে আগুন দিচ্ছে, জনগণের জান-মালের ক্ষতি সাধন করে যাচ্ছে। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখে আইনের মধ্যে আনা অনেকটাই কষ্টসাধ্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে এসব দুষ্কৃতকারীকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব।

 

জাগো নিউজ

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
error: ধন্যবাদ!